সচেতন ব্যক্তিদের বৈশিষ্ট্য নিয়ে কিছু পর্যালোচনা

আমাদের জনগোষ্ঠীকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

  • সচেতন
  • অসচেতন
  • অচেতন।
সচেতন ব্যক্তিগণ হচ্ছেন বিজ্ঞ বা জ্ঞানী যারা সত্যকে সহজে সত্য বলে মেনে নেন।
অসচেতন বা অজ্ঞ ব্যক্তি যারা না বুঝে সত্যকে প্রত্যাখান করে থাকে।
অচেতন বা জ্ঞান পাপী যারা জেনে বুঝে সত্যকে প্রত্যাখান করে থাকেন।

সচেতন ব্যক্তিকে বুঝানো সহজসাধ্য, অসচেতন ব্যক্তিকে বুঝানো কষ্টসাধ্য কিন্তু অচেতন ব্যক্তি কে বুঝানো অসাধ্য। সচেতন ব্যক্তিগণ সংখ্যায় স্বল্প সংখ্যক যারা হচেছন ০৫%। অসচেতন ব্যক্তিগণ হচ্ছেন ৭৫% এবং অচেতন ব্যক্তি হচ্ছে ২৪.৫%। সচেতন ব্যক্তি ও অচেতন ব্যক্তি মিলে হচ্ছে ২৫% যারা হচ্ছে স্রোতের ন্যায়। আর অসচেতন ব্যক্তিগণ
হচ্ছে শেওলার ন্যায়। স্রোত যে দিকে যায় শেওলাগুলো ও সেদিকে যায়।
  1. আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে মসজিদ ভিত্তিক সৎ ব্যক্তিগণকে সংগঠিত করে প্রত্যেক মসজিদ থেকে সচেতনতামূলক কার্য্যক্রমকে জোরদার করা। কেননা সচেতনতা হচ্ছে বালতির তলা। তলাবিহীন বালতি যেমন কোন দিন কোন বস্তু দিয়ে ভরা যায় না, তদ্রুপ সচেতনহীন মানুষগুলোকে সম্পদ দিয়ে কোনদিন সমৃদ্ধশালী করা যায় না। একজন সচেতন ব্যক্তি দলের তুলনায় দ্বীনের প্রাধান্য দিবেন। কেননা তিনি জানেন যারা দ্বীনের তুলনায় দলের প্রাধান্য দেন তারা প্রকৃত দ্বীনদার নয়, তারা হচ্ছে দুনিয়াদার। আর দুনিয়াদার লোকগুলো হচ্ছে ধোকাবাজ।
  2. একজন সচেতন ব্যক্তি নিজে মনোমালিন্য-ঝগড়া, বিবাদ মিমাংসা করে নেয়ার জন্য কিংবা মিমাংসা করে দেয়ার জন্য ব্যাকুল হবেন। কেননা তিনি জানেন মিমাংসা করা মাওলার আইন, মামলা করা মানুষের আইন। মিমাংসায় মিলবে মাওলার সন্তষ্টি, মামলায় হবে ইবলিশ সন্তষ্ট, হবে অর্থ নষ্ট, বাড়বে মনের কষ্ট, পরিবারে হবে শান্তি নষ্ট, সমাজে হবে শৃঙ্খলা নষ্ট, দেশের হবে সমৃদ্ধি নষ্ট।
  3. একজন সচেতন ব্যক্তি সহজে সত্যকে গ্রহণ করে থাকেন। কেননা মহান আল্লাহপাক ঘোষণা করেন,“মুমিন ব্যক্তিদের সামনে যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের[সাঃ] বানী উপস্থাপন করা হয় তখন তারা এ কথা বলে যে, আমরা শুনলামএবং আমরা মানলাম।” কাজেই কোন মুমিনের আল্লাহর বাণীতে ব্যাকরণ তালাশ করার কোন অবকাশ নেই।
  4. একজন সচেতন ব্যক্তির শ্রেষ্ঠ কাজ হচ্ছে অন্য অসচেতন ব্যক্তিকে সচেতন করা এবং অচেতন ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলা। কেননা তিনি জানেন সচেতনতা হচ্ছে বড় সম্পদ,সচেতনতা হচ্ছে বড় শক্তি আর সচেতন মানুষগুলো হচেছ সোনার মানুষ। যারা সোনার চেয়ে ও দামী।
  5. একজন সচেতন ব্যক্তি অল্পে তুষ্ট। তিনি অসচ্ছল হলেও অভাবী নন। সচেতন ব্যক্তি জানেন যে, যার ধন নেই সে দরিদ্র নয়। যার আশা যত বেশী সে তত বেশী দরিদ্র।
  6. একজন সচেতন ব্যক্তি সমাজ-সভ্যতার উন্নয়নে চিন্তা ভাবনা করে থাকেন। তিনি সমাজের মানুষের সুখ-দুঃখের ভাগী হন। সমাজ-সভ্যতার উন্নয়নে সচেষ্ট তিনি। সমাজ লাগে না শয়তানের আর ফিরিশতার। এ দেশের এক হাজার এম,এ/কামিল/ইমাম সাহেবদের মধ্যে কতজন খুজে পাওয়া যাবে যারা ২৪ ঘন্টায় এক ঘন্টা সমাজ-সভ্যতার উন্নয়নে আলাপ আলোচনা করে থাকেন? সমাজ-সভ্যতার ঊন্নয়নে সচেতনতা বৃদ্ধি অপরিহার্য। পূর্বেই উল্লেখ করেছি সচেতনতা হচ্ছে বালতির তলা। তলাবিহীন বালতি যেমন কোনদিন কোন বস্তু দিয়ে ভরা যাবে না সচেতনহীন মানুষগুলোকে সম্পদ দিয়ে সমৃদ্ধশালী করা যাবে না।
  7. একজন সচেতন ব্যক্তি হচ্ছেন একটি জ্বলন্ত মোমবাতি।একটি মোমবাতি দ্বারা যেমন হাজারো মোমবাতি জ্বালানো যায় তেমনি একজন সচেতন ব্যক্তির দ্বারা হাজারো অসচেতন ব্যক্তিকে সচেতন করা যায়। সচেতনতা হচ্ছে বড় সম্পদ। সচেতনতা হচ্ছে বড় শক্তি।সচেতন মানুষগুলো হচ্ছেন সোনার মানুষ যারা সোনার চেয়ে ও দামী।দেহের শ্রেষ্ঠ সম্পদ হচ্ছে রক্ত,দেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ হচ্ছে সোনা,সমাজের শ্রেষ্ঠ সম্পদ হচ্ছেন সচেতন মানুষগুলো।
  8. একজন সচেতন ব্যক্তির স্বভাবে থাকবে সমঝোতাবোধ। একজন সচেতন ব্যক্তির স্বভাবে থাকবে স্বার্থত্যাগ। কেননা তিনি জানেন সহিংসতার কারণ হচ্ছে সমঝোতার অভাব,সহিংসতার কারণ হচ্ছে স্বার্থপরতা। সহিংসতায় সমাজ-সভ্যতা ধ্বংস হয়। একহাজার এম,এ/কামিল/ইমাম সাহেবদের মধ্যে কত জন খুজে পাওয়া যাবে যারা ২৪ঘন্টায় চার মিনিট সময় ধরে সমঝোতা স্বার্থত্যাগের গুরুত্ব আলোচনা করে থাকেন? এদের মাধ্যমেই সমাজ-সভ্যতা আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌছেছে। সকল শ্রেনী-পেশার লোকের দল রয়েছে অথচ সৎ লোকের কোন দল নেই। আমি প্রত্যেক মসজিদ থেকে সৎ লোকগুলোকে সংগঠিত করার প্রচেষ্টা করছি । প্রত্যেক মসজিদ থেকে যেন ২৪ ঘন্টায় অন্ততঃ ৪ মিনিট সচেতনতা মূলক কথাবার্তা প্রত্যেকদিন বলা শুরু করে ।
আল্লাপাক আমাদের সহায় হউন । আমিন ।
প্রনয়ণে প্রকৌশলী মোঃ আজিজুর রহমান
পাটকেলঘাটা, তালা, সাতক্ষীরা।

0 comments: