আমরা কেউবা সওয়াব অর্জনে সচেষ্ট, কেউবা সিলেবাস বাস্তবায়নে ব্যস্ত, আমাদেরকে সৎ কাজ কায়েমে করতে হবে কষ্ট তথা জিহাদ করতে হবে

বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ। ৩৭ বছর হল আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি। অথচ আজ পর্যন্ত আমরা অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হতে পারিনি। আমরা শিশুর মত স্বাধীনতালাভ করেছি। শিশুকে স্বাধীনতা দিলে ও সে যেমন স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে সক্ষম নয়, কেননা সে অবুঝ তথা নির্বোধ। আমরা ও বর্তমান সময়ের বাংলার শিশু মুসলমানগণ সে স্বাধীনতার মূল্য বুঝিনি।

মুসলমানদের কাজ হচ্ছে সৎ কাজকে প্রতিষ্ঠিত করে অসৎ কাজকে প্রতিরোধ করা। কেননা সৎ কাজের মধ্যে আলো রয়েছে আর অসৎ কাজের মধ্যে রয়েছে অন্ধকার। অন্ধকারের কোন ক্ষমতা নেই, ক্ষমতা রয়েছে আলোর। যে ঘরে আলো ঢোকার সুযোগ পায় না সে ঘরটি দিনের বেলায় ও থাকে অন্ধকার। আলো ধরাতে পারলে যেমন অন্ধকার দূরে যেতে বাধ্য তেমনি মিমাংসা করে দিতে পারলে আর মামলা হবে না। আমরা আমাদের আলাপ-আলোচনায় আলো সদৃশ বিষয়গুলোকে প্রাধান্য না দেয়ায় সমাজে এত বিশৃঙ্খলা। যেমন মিমাংসার মধ্যে আলো রয়েছে।

মিমাংসার বিষয়টিকে আমরা আমাদের আলাপ-আলোচনায় যত প্রাধান্য দিতে পারব কোর্ট-কাছারী থেকে তত মামলা কমে যাবে। তাই আমি বলছি মিমাংসা করে মামলা প্রতিরোধ করা যাবে। কেননা মিমাংসার মধ্যে আলো রয়েছে। মহানবী (সাঃ ) দুনিয়ায় এসেছিলেন এই আলোর দাওয়াত নিয়েই। কাজেই আলিমদের দায়িত্ব এই আলোর দাওয়াত দেয়ার। অর্থ্যাৎ যে কাজের মধ্যে আলো রয়েছে সে কাজগুলোরই বিষয় বয়ানে প্রাধান্য দিবেন বক্তাগণ। ঐ কাজগুলোকে আমি পাজামার সঙ্গে তুলনা করেছি।

সৎ কাজের দ্বারাই স্বাধীনতা অর্থবহ হবে। সৎ কাজের দ্বারাই সমাজে শৃঙ্খলা আসবে, দেশে সমৃদ্ধি আসবে। সওয়াবের দ্বারা নয়। আমি মাত্র পাঁচটি সৎ কাজের কথা বয়ান করে চলেছি। দোয়া-দরুদ পাঠ করে সওয়াব অর্জন করা, আর সৎ কাজ করা এক কথা নয়। সৎ কাজ বাস্তবায়নের জন্য দোয়া করা দরকার, চেষ্টা করা জরুরী, যেমন সন্তানলাভের জন্য মোনাজাত করা দরকার, বিয়ে করা জরুরী।

বিয়ে না করে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করা, আর চেষ্টা না করে সৎ কাজ বাস্তবায়নে বয়ান করা এক কথা। মুসলমানদের কোন মজলিশে সৎ কাজ বাস্তবায়নের গুরুত্ব আলোচনা করা হয় কি? সৎ কাজে সাধ্যমত সাহায্য করায় প্রেরনা প্রদান করা হয় না।এমনকি সৎ কাজে সুযোগমত উপদেশ দেয়ারও কোন তাগিদ নেই। যা আছে তা হচ্ছে পাঁচ নম্বরে, পাস নম্বরে ও নহে।

মুসলমানদের সমাজ-সভ্যতার উন্নয়নে মসজিদ তৈরী করা হলে ও মসজিদে সমাজ উন্নয়নের কোন কথা নেই। আছে সওয়াব অর্জনের কথা, আছে দলের উন্নয়নের কথা। সৎ কাজ কি করে বাস্তবায়ন হবে সে বিষয়ে কোন কথা কখনও শুনেছেন কি? অথচ সৎ কাজের দ্বারাই সমাজের উন্নয়ন হয়ে থাকে। সমঝোতা ছাড়া সৎ কাজ বাস্তবায়ন করা যায় না। স্বার্থত্যাগ ছাড়া সৎ কাজ বাস্তবায়ন করা যায় না। সমবেত হওয়া ছাড়া সৎ কাজ বাস্তবায়ন করা যায় না। একা একা কখনও সৎ কাজ বাস্তবায়ন করা যায় না।

সৎ কাজ বাস্তবায়নে, সৎ কাজটি কাউকে না কাউকে শুরু করতে হবে। অতঃপর সে সৎ কাজে অন্য সকলকে সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করতে হবে, যদি তারা মুমিনের কাতারে দাড়াতে চান। সমাজের সকল সৎ লোককে সৎ কাজে পরস্পর পরামর্শ ও দিতে হবে যদি তারা মুমিনের কাতারে দাড়াতে চান।

মসজিদে নববীতে এ ধরনের কার্যক্রম ছিল। কিন্তু আমাদের তৈরী মসজিদগুলোতে আছে সওয়াব অর্জনের আলোচনা এবং তারা সওয়াব অর্জনে সচেষ্ট, তেলাওয়াতে তৃপ্ত সৎ কাজে উপদেশ দিতে ও ওনাদের কষ্ট। কিছু কিছু মসজিদে আছে দলের উন্নয়নের আলোচনা। তারা দলের সমর্থনে দলিল পেশ করে থাকেন। উদ্দেশ্য থাকে কি করে দলে ভিড়ানো যায়। এরা সিলেবাস বাস্তবায়নে ব্যস্ত। আমাদেরকে দ্বীন কায়েমে কষ্ট করতে হবে তথা জিহাদ করতে হবে। সৎ কাজ বাস্তবায়নই হচেছ দ্বীন। সৎ কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পি,এস,এফ সচল রাখা।

আমি সকল দলের প্রতি বিনীত অনুরোধ করছি আপনারা যার যার অবস্থান থেকে দিন-রাত ২৪ ঘন্টায় অন্ততঃ ৪ মিনিট সময় ধরে পি,এস,এফ সচল রাখার বিষয়ে জনগণকে নসিহত করতে থাকুন। মহান আল্লাহপাক আমাদের সহায় হউন! আমীন!

প্রনয়ণে প্রকৌশলী মোঃ আজিজুর রহমান,জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, মোরেলগঞ্জ,বাগেরহাট (রচনার সময়ঃ ৩০-১০-২০০৮)

0 comments: